
মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
চ্যানেলের গভীরতা ঠিক রাখতে আবারও শুরু হচ্ছে মোংলা বন্দর ড্রেজিংয়ের কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এই বন্দরে দেশি বিদেশি বড় বড় বানিজ্যিক জাহাজ ভিড়তে পারবে। এছাড়া ড্রেজিয়ের কাজ শেষ হলে আন্তর্জাতিক বানিজ্য পন্য আমদানি রপ্তানিতে বন্দরের গতি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন বন্দর ব্যাবহারকারীরা। বন্দর সুত্র জানায়,নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই ড্রেজিং প্রকল্পে ব্যায় হবে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। নানা প্রতিবন্ধকতার কারনে ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মৃতপ্রায় বন্দরে পরিনত হয়েছিল মোংলা বন্দর। এ সময় বন্দরটি অচল হয়ে পড়ার মুল কারন ছিল বন্দরের আউটার ও ইনারবার চ্যানেলে ড্রেজিং না করা। যার কারনে ঔই সময় চরম নাব্য সংকট দেখা দেওয়ায় জাহাজ ভিড়তে পারতো না এ বন্দরে। মাসের পর মাস জাহাজ শুন্য হয়ে অচলাবস্থা ছিল বন্দর জুড়ে। বন্দরের আউটারবার ( বহিনোঙ্গর) ও ইনারবারে ( অভ্যন্তরীণ) নাব্য সংকটের কারনে কন্টেইনারবাহী ৯ দশমিক ৫০ মিটার গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে না পারায় কন্টেনারারাইজড মালামাল আমদানি রপ্তানিতে ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। ২০২০ সালে ৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কিলোমিটার আউটার ড্রেজিং এর কাজ শেষ হয়। এখন আউটার বার চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ৯ মিটার ড্রাফটের অনায়াসে আসা যাওয়া করছে। পরে বন্দর জেটিতে সাভাবিক জোয়ারে ৯ দশমিক ৫০ মিটারের অধিক গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ আনার জন্য মোংলা বন্দরের ১৪৫ কিলোমিটার নৌ চ্যানেলের মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার নৌপথ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে বন্দরের যেমন সক্ষমতা বাড়বে একই সাথে নৌ চ্যানেলের নাব্যতা ফিরলে বড় জাহাজ আর সমস্যা হবে না। মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের পরিকল্পনা প্রধান মো: জহিরুল হক জানান,,নৌ চ্যানেল এই বন্দরের প্রান। সেই চ্যানেলকে রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য মোংলা বন্দর এরই মধ্যে একটি বড় প্রকল্ল হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি পাচ বছর মেয়াদে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করা হবে। ১ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নৌবাহিনী অত্যান্ত দক্ষতায় শেষ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, দেশের দ্ধিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর বাচিয়ে রাখার সার্থে পশুর চ্যানেল ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। প্রথমে আউটার ড্রেজিং শেষ করে ২০২১ সালের ১৩ মার্চ ইনারবার ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মোংলা বন্দর দক্ষিন ও পশ্চিম অঞ্চলে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে আমরা সেটা প্রমান করতে পেরেছি। তিনি আরো বলেন এবছরে বন্দরের রেকর্ড সংখ্যক জাহাজের আগমন – নির্গমনের সাথে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরকে গতিশীল ও আধুনিক করতে বন্দর কতৃপক্ষ বেশকয়েকটি প্রকল্প হতে নেওয়া হয়েছিল।, তার মধ্যে কিছু প্রকল্প শেষ হয়েছে কিছু চলমান রয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনারবার বা অভ্যন্তরীণ চ্যানেল ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে এবং পশুর চ্যানেল সংরক্ষন ড্রেজিং শুরু করতে যাচ্ছি। গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মযজ্ঞ শেষ হলে মোংলা বন্দরের নাব্য সংকট নিরসন সহ গতিধারা ও দেশের দ্ধিতীয় বৃহওম সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম, জুলফিকার আলী ও ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, দেশের এই বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গতিশীল বাড়াতে নৌ চ্যানেলে ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। তাই ড্রেজিং কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে। আর কোন কারনে ড্রেজিং বন্ধ হয়ে গেলে জাহাজ আসা ব্যহত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।