কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:
স্থানীয় সরকার কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প (LGCRRP)-এর আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কেন্দুয়া পৌরসভায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব উন্নয়ন কার্যক্রমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে মেসার্স তশিবা এন্টারপ্রাইজ। তবে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্যাকেজ নং LGCRRP/Kendua/2024-25/W-03 এর আওতায় কেন্দুয়া বাজারের মেইন রোড—মনসুরের দোকান থেকে অজয় পালের দোকান হয়ে জয়হরি স্কুল গেট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হয় গত ২৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে রাস্তার আনুমানিক ১০০ মিটার অংশের উপরের সারফেস থেকে পাথর উঠে গিয়ে নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি পত্র গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে। ওই পত্রে উল্লিখিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে উক্ত রাস্তার ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনর্নির্মাণ (Rectification) করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, একই প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ নং LGCRRP/Kendua/2024-25/W-04 এর অধীন সিসি রোড উন্নয়ন কাজ, যেটি কেন্দুয়া-চিরাং রোড (আনন্দ স্কুল রোড) থেকে মো. জসিম উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের, তার কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরুর তারিখ ছিল ৫ জানুয়ারি ২০২৫ এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ৫ জুলাই ২০২৫। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এখনও পর্যন্ত কাজটি শুরুই করা হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শান্তিবাগ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি খোড়াখুঁড়ির পর ফেলে রাখা হয়েছে। এতে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়দের ক্ষোভ এতটাই গভীর যে, তারা প্রতিক্রিয়া জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে মেসার্স তশিবা এন্টারপ্রাইজ-এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রাসেলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। ইনশাআল্লাহ কাল থেকেই আমরা কাজ শুরু করব।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED)-এর আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত LGCRRP প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল করোনা-পরবর্তী সময়ে নগর অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর সেবা নিশ্চিতে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ। কিন্তু বাস্তব চিত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নে শৈথিল্য, নিম্নমান এবং সময়মতো কাজ শেষ না করার অভিযোগ স্থানীয় জনগণের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করছে।