, শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবদল নেতা মাহাবুব হত্যায় সিসিটিভি ফুটেজে কিলিং মিশনের কয়েকজন শনাক্ত। 

  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
  • ৫৮ পড়া হয়েছে

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :

খুলনার দৌলতপুর থানার যুবদল নেতা মাহাবুবুর রহমান মোল্লাকে হত্যার সময় আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করছে পুলিশ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ছবি দেকে স্থানীয়রা বলছেন, চরমপন্থী নেতা হুমার সহযোগীরা হত্যায় অংশ নেয়। তাদের নিরাপত্তা দিতে আশপাশে আরোও কয়েকজন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে আসিফ, রায়হান, ইমন সহ কয়েকজন অস্ত্র মামলায় আট মাস কারাগারে ছিল। গত জুনের শেষের দিকে তারা জামিনে ছাড়া পায়। এর পরপরই একটি ভবন দখলের ঘটনা নিয়ে মাহাবুব ও তার বন্ধু জাকিরের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। এছাড়া আরেক চরমপন্থী আরমানের সাথে সখ্য, আধিপত্য বিস্তার, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং গত অক্টোবরে তাদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া নিয়ে হুমা অনুসারীদের সাথে মাহাবুবের দ্ধন্দ চলছিল। এদিকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে শনিবার গভীর রাতে সজল নামে এক যুবককে মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রোববার আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে দৌলতপুর থানায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার ( উওর) তাজুল ইসলাম বলেন, হত্যার সময় সজল কাছাকাছি থেকে সন্ত্রাসীদের তথ্য দিয়েছেন। তার তথ্যর ভিত্তিতে দুপুরে ফাকা রাস্তায় সন্ত্রাসীরা হত্যা করে পালিয়ে যায়। ১১ জুলাই দুপুরে দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পাড়া নিজ বাড়ির সামনে মাহাবুবকে গুলি হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। হত্যার আগে মাহাবুব ও স্থানীয় এক যুবক প্রাইভেটকার পরিস্কার করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জানান, মোটরসাইকেল আসা তিন যুবক প্রাইভেটকারের সামনে দাড়ায়। শুধু একজনের মাতায় হেলমেট ছিল। সন্ত্রাসীরা মাহাবুবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তিনি পালিয়ে যান। হত্যা শেষে ঔই মোটরসাইকেল যোগে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এই সড়কের দুপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে আইন শৃংখলা বাহিনী। স্থানীয়দের মাধ্যমে ফুটেজের কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবককে চিহ্নিত করেন অনেকে। স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেলের মাঝে বসা যুবকের নাম আসিফ। চালক ছিল রায়হান। দুটি ফুটেজে বাইকের ভিন্ন দুই যুবককে দেখা যাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের সাথে আরোও কয়েকজন আশপাশে ছিল। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গত ৯ অক্টোবর বাগেরহাটের রামপালে অস্ত্র সহ হুমায়ুন কবীর হুমা, রায়হান ইসলাম, আসিফ মোল্লা ও ইমন হাওলাদার নামে চারজনকে আটক করা হয়। স্থানীয় চরমপন্থী নেতা বড় শাহীনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা সেখানে গিয়েছিল বলে পুলিশের ধারনা। আটকের পেছনে আরেক সন্ত্রাসী আরমানের ভুমিকা ছিল। আরমান সম্পর্কে মাহাবুবের খালাতো ভাই। স্থানীয়রা জানান, রায়হান, আসিফ ও ইমনের বাড়ি মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ায়। আটমাস জেল খেটে গত মাসে তারা জামিন পায়। ছাড়া পেলেও বাড়িতে থাকতো না। একাধিক হত্যা মামলায় নাম থাকায় আটকের আগে থেকেই তারা ফেরারি জীবন কাটাচ্ছিল। স্থানীয়রা জানান, খালাতো ভাইয়ের প্রভাব ও যুবদল নেতা হওয়ায় ৫ আগষ্টের পর এলাকার জমির ব্যবসা, মাদক সিন্ডিকেটের সবকিছুই মাহাবুবের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চরমপন্থী হুমা ও উঠতি সন্ত্রাসীদের সাথে মাহাবুবের দুরত্ব তৈরি হয়। এছাড়া কুয়েট সংঘর্ষের সময় রাম দা হাতে তার অবস্থান নিয়ে ও একটি অংশ ক্ষুদ্ধ ছিল। দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী বলেন, খুনের কারন হিসেবে একাধিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সবকিছু আমরা যাচাই করে দেখছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দ্রুতই তারা গ্রেফতার হবে।

জনপ্রিয়

যুবদল নেতা মাহাবুব হত্যায় সিসিটিভি ফুটেজে কিলিং মিশনের কয়েকজন শনাক্ত। 

প্রকাশের সময় : ০৮:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :

খুলনার দৌলতপুর থানার যুবদল নেতা মাহাবুবুর রহমান মোল্লাকে হত্যার সময় আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করছে পুলিশ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ছবি দেকে স্থানীয়রা বলছেন, চরমপন্থী নেতা হুমার সহযোগীরা হত্যায় অংশ নেয়। তাদের নিরাপত্তা দিতে আশপাশে আরোও কয়েকজন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে আসিফ, রায়হান, ইমন সহ কয়েকজন অস্ত্র মামলায় আট মাস কারাগারে ছিল। গত জুনের শেষের দিকে তারা জামিনে ছাড়া পায়। এর পরপরই একটি ভবন দখলের ঘটনা নিয়ে মাহাবুব ও তার বন্ধু জাকিরের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। এছাড়া আরেক চরমপন্থী আরমানের সাথে সখ্য, আধিপত্য বিস্তার, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং গত অক্টোবরে তাদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া নিয়ে হুমা অনুসারীদের সাথে মাহাবুবের দ্ধন্দ চলছিল। এদিকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে শনিবার গভীর রাতে সজল নামে এক যুবককে মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রোববার আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে দৌলতপুর থানায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার ( উওর) তাজুল ইসলাম বলেন, হত্যার সময় সজল কাছাকাছি থেকে সন্ত্রাসীদের তথ্য দিয়েছেন। তার তথ্যর ভিত্তিতে দুপুরে ফাকা রাস্তায় সন্ত্রাসীরা হত্যা করে পালিয়ে যায়। ১১ জুলাই দুপুরে দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পাড়া নিজ বাড়ির সামনে মাহাবুবকে গুলি হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। হত্যার আগে মাহাবুব ও স্থানীয় এক যুবক প্রাইভেটকার পরিস্কার করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জানান, মোটরসাইকেল আসা তিন যুবক প্রাইভেটকারের সামনে দাড়ায়। শুধু একজনের মাতায় হেলমেট ছিল। সন্ত্রাসীরা মাহাবুবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তিনি পালিয়ে যান। হত্যা শেষে ঔই মোটরসাইকেল যোগে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এই সড়কের দুপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে আইন শৃংখলা বাহিনী। স্থানীয়দের মাধ্যমে ফুটেজের কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবককে চিহ্নিত করেন অনেকে। স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেলের মাঝে বসা যুবকের নাম আসিফ। চালক ছিল রায়হান। দুটি ফুটেজে বাইকের ভিন্ন দুই যুবককে দেখা যাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের সাথে আরোও কয়েকজন আশপাশে ছিল। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গত ৯ অক্টোবর বাগেরহাটের রামপালে অস্ত্র সহ হুমায়ুন কবীর হুমা, রায়হান ইসলাম, আসিফ মোল্লা ও ইমন হাওলাদার নামে চারজনকে আটক করা হয়। স্থানীয় চরমপন্থী নেতা বড় শাহীনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা সেখানে গিয়েছিল বলে পুলিশের ধারনা। আটকের পেছনে আরেক সন্ত্রাসী আরমানের ভুমিকা ছিল। আরমান সম্পর্কে মাহাবুবের খালাতো ভাই। স্থানীয়রা জানান, রায়হান, আসিফ ও ইমনের বাড়ি মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ায়। আটমাস জেল খেটে গত মাসে তারা জামিন পায়। ছাড়া পেলেও বাড়িতে থাকতো না। একাধিক হত্যা মামলায় নাম থাকায় আটকের আগে থেকেই তারা ফেরারি জীবন কাটাচ্ছিল। স্থানীয়রা জানান, খালাতো ভাইয়ের প্রভাব ও যুবদল নেতা হওয়ায় ৫ আগষ্টের পর এলাকার জমির ব্যবসা, মাদক সিন্ডিকেটের সবকিছুই মাহাবুবের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চরমপন্থী হুমা ও উঠতি সন্ত্রাসীদের সাথে মাহাবুবের দুরত্ব তৈরি হয়। এছাড়া কুয়েট সংঘর্ষের সময় রাম দা হাতে তার অবস্থান নিয়ে ও একটি অংশ ক্ষুদ্ধ ছিল। দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী বলেন, খুনের কারন হিসেবে একাধিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সবকিছু আমরা যাচাই করে দেখছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দ্রুতই তারা গ্রেফতার হবে।