
মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন,নেত্রকোনা জেলা ক্রাইম রিপোর্টারঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে হুমকি, মানহানিকর অপপ্রচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ২জন সাংবাদিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় মামলা হয়েছে।
১৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে দায়েরকৃত এই মামলায় সাংবাদিক মহিউদ্দিন তালুকদার ও তানজিলা শাহ রুবি এবং গড়াডোবা ইউপি’র সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মনজুরা আক্তারকে অভিযুক্ত করে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ২৫ ও ২৭ ধারায় রুজু করা হয়, যার মামলা নং ১৭/২০২৫
উক্ত মামলার বাদী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন- গত ২৯মে ২০২৫ তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদে একটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনাকালে অভিযুক্ত মহি উদ্দিন তালুকদার অনুমতি ছাড়াই কক্ষে প্রবেশ করে ভিডিও ধারণ করেন এবং নিষেধ করা সত্ত্বেও ২০ মিনিট ধরে ভিডিও ধারণ চালিয়ে যান।
পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে মানহানির হুমকি দেন।
এছাড়াও ২জুলাই ২০২৫ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), কেন্দুয়া ইউনিয়নে হোল্ডিং এসেসমেন্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করতে গেলে পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেন—৩নং বিবাদী মনজুরা আক্তার ও ২নং বিবাদী তানজিলা শাহ রুবির সহায়তায় সাংবাদিক মহিউদ্দিন বিভিন্ন সময় পরিষদে এসে চাঁদা দাবি করেন এবং চাঁদা না দিলে মিডিয়ায় মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর হুমকি দেন।
ঘটনার পর ইউএনও, তদন্ত পরিচালনা করলে মনজুরা আক্তার তদন্তে বাধা দেন এবং উত্তেজিত হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ডাকা হয় এবং তাকে সাময়িকভাবে পাশের কক্ষে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় সাংবাদিক তানজিলা রুবি ও মহি উদ্দিন আবারও ভিডিও ধারণ করে তা বিকৃতভাবে প্রচার করেন।
সাংবাদিক মহিউদ্দিন তার ফেসবুক আইডি MD. Mohiuddin Talukder-এ একাধিক মানহানিকর পোস্ট দেন।
৪জুলাই ২০২৫ তারিখে তিনি “ঘুষ দুর্নীতির নেশায় মাতাল হওয়ার মুখ উন্মোচন করায় সাংবাদিককে মারধর করে হাত-পা বেঁধে খবর দেওয়ার আল্ট্রিমেটাম দেন কেন্দুয়া উপজেলার ইউএনও” শিরোনামে একটি পোস্ট করেন।
একই সঙ্গে ইউএনও ও ইউপি কর্মকর্তাদের নিয়ে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে অপপ্রচার চালান।
১৩জুলাই তিনি ফেইসবুকে আরেকটি পোস্টে লেখেন, “মহিলা সদস্যকে, মেম্বারী চুদিয়ে দেবো বললেন কেন্দুয়ার ইউএনও”, যা প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্বেষ ছড়ানোর শামিল।
এছাড়াও সাংবাদিক তানজিলা রুবি নিজেও তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে ইউএনও ও ইউপি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেন।
মামলায় ইউপি সদস্য মোঃ কাঞ্চন মিয়া, মোঃ আলমগীর, মোঃ আবু হানিফা ও মোঃ আনিছুল হকসহ একাধিক ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে নাম উল্লেখ করেছেন।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি গ্রহণ করেছেন এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর অধীন তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সরকার পরিচালনায় নিয়োজিত একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে দপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত করার অভিযোগ নতুনভাবে স্থানীয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ও সম্মানজনিত প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে।