
রেজুয়ান হাসান জয়|নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক সময়ের সোচ্চার কণ্ঠস্বর ফাতেমা খানম লিজা অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২ আগস্ট) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেওয়া এক আবেগঘন বার্তায় তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এক সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) চট্টগ্রাম মহানগর শাখার মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত লিজা, তাঁর দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও হতাশার গল্প শেয়ার করেছেন বিদায়ী বার্তায়।
রাজনীতি ছেড়েছি, কিন্তু দায়বদ্ধতা নয়
লিজা লিখেছেন, রাজনীতি কেবল মঞ্চের গল্প নয়, এর পেছনে থাকে অগণন অপমান, হেয় করা, আর দলের ভেতরকার প্রতিযোগিতার ছুরিকাঘাত। আমি আজ বিদায় জানালেও একজন নাগরিক হিসেবে দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব শেষ হয়নি।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, চট্টগ্রামের মতো শহরে নারীদের রাজনীতিতে প্রবেশ মানেই একটা যুদ্ধের শুরু। দলের ভেতর থেকেই যখন সম্মানহানির শিকার হতে হয়, তখন সেই লড়াই হয়ে ওঠে আরও কঠিন।
নারীর রাজনীতি মানেই পরীক্ষা নয়, নির্যাতনের পাঠশালা
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লিজা লেখেন, রাজনীতিতে এসে যা পেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সয়ে গেছি। সমাজের চাপ, নিরাপত্তাহীনতা, এবং সবচেয়ে কষ্টের নিজ দলের লোকজনের অবমূল্যায়ন।
তবুও নিজের চেতনাগত অবস্থানে অটল থেকে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন এবং শহীদদের প্রতি আমি কখনো বেইমানি করিনি। আমার অবস্থান ছিল স্বচ্ছ, স্পষ্ট এবং নীতিনিষ্ঠ।
বিদায় নয়, প্রতিশ্রুতির ঘোষণা
ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে ফাতেমা খানম লিজা জানান, রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেও দেশের ডাকে তিনি সাড়া দেবেন।
রাজনীতির ময়দানে আমাকে হয়তো আর দেখা যাবে না। কিন্তু যদি আবার কোনো রক্তিম জুলাই আসে, যদি এই দেশ আমাকে ডাকে, আমি ফিরব। দেশের দুঃসময়ে আমি পাশে থাকব এটাই আমার অঙ্গীকার।
সুষ্ঠু ধারার প্রত্যাশা
লিজা বিদায়ী বক্তব্যে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আহ্বান জানান। “যারা নারীদের অসম্মান করে, রাজনীতিকে ব্যক্তিগত লোভের হাতিয়ার বানায়, একদিন যেন তাদের মুখোশ খুলে পড়ে। আমি দলীয় রাজনীতি ছাড়ছি, কিন্তু সংগ্রামী চেতনাকে ছাড়ছি না।