মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ক্রাইম রিপোর্টার;
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে সংঘবদ্ধ হামলার শিকার হয়েছে এক স্কুলপড়ুয়া কিশোর। ০১ আগস্ট শুক্রবার বিকেল আনুমানিক ৫ টার সময় পাঁচপীরকান্দা খেলার ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আহত কিশোর আরমান (১৫) বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
জানা যায় আহত আরমান কেন্দুয়ার সায়মা শাহজাহান একাডেমির ৭ম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্র এবং স্থানীয় কান্দাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় তার বাবা ৩ আগষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- প্রায় ছয় মাস জেল হাজতে ছিল আবদুল হক। তার সহোদর ভাগ্নের খুনের দায়ে জেলে থাকতে হয়েছে। এই ঘটনার তিনদিন আগে খুনের মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন আরমানের বাবা আব্দুল হক। সেই মামলাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সঙ্গে বাদীর পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন বিকেলে আব্দুল হক, তার দুই ছেলে আরমান ও কবীর ফুটবল খেলা দেখতে যান মাঠে। খেলায় কবীর অংশ নিলেও আরমান দর্শক সারিতে বসে খেলা দেখছিল। তাদের সাথে শতশত দর্শকও ছিল। অভিযোগে বলা হয়- বিকাল ৫টার সময় সানোয়ার হোসেন, আবুল মিয়া, রুমান, খোকা মিয়া ও রবিন মিয়া গং কয়েকজন সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাঠে দৌড়ে এসে হাজির হন। তারা প্রথমে আব্দুল হককে ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা করে। তিনি দৌড়ে পালিয়ে মাঠের পাশে এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে তার বড় ছেলে কবীরকে লক্ষ্য করে পিঠে কুপ দিলে দৌড়ে প্রান বাঁচায়। এর পরে আরমানকে লক্ষ্য করে সংঘবদ্ধভাবে ঘেরাও করে লোহার রড দিয়ে বারি মারিয়া ফেলে দেয় মাঠের এক পাশে। আরমান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আরমানের দুটি পায়ে রামদা দিয়ে কোপাতে থাকেন এবং লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি বাইরাইতে থাকে। তার আত্ম চিৎকার চেচামেচি শুনে আরমানের বিবাহিত বোন তাকে বাচাতে শরীরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে, এলাকার গন্যমান্যরা মারতে নিষেধ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে চলে যায়। আরমানের রক্ত করণ দেখে রহমান নামের এক দর্শক নিজের পরনের লুংগি খুলে দুটি পা বাধতে চেষ্টা করে। স্থানীয়রা ও স্বজনরা রক্তাক্ত অবস্থায় আরমানকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে সে সেখানে চিকিৎসাধীন এবং ইতোমধ্যে তার শরীরে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনা এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা এমন নৃশংস ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী। যদিও মুখ খুলতে নারাজ প্রত্যক্ষদর্শীরা। উল্লেখ্যঃ মাসকা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামে মামা আব্দুল হক হাতে খুন হোন ভাগ্নে হারুন অর রশিদ। খুনের এই জেরে পরদিন মামা আবদুল হক সহ ৬টি পরিবারের বসত বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে লুটপাট করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা লুটিয়ে নিয়ে ছিল।