শাহ আলী তৌফিক রিপন বিশেষ প্রতিনিধিঃ
উপজেলায় জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত ইদু মিয়া (৫০) অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ১ আগস্ট (শুক্রবার) ভোরে উপজেলার পনকেন্দুয়া হাওরের একটি বীজতলায় এই নির্মম হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ৩ আগস্ট রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী লাইলু আক্তার কেন্দুয়া থানায় ৫ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন ভোরে ইদু মিয়া তার ছেলে নূরে আলমকে নিয়ে সাক্ষী উজ্জল মিয়ার মালিকানাধীন বীজতলা থেকে নিজেদের চারা তুলতে যান। এ সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে একই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, সিদ্দিকুর রহমান, শাকিল মিয়া, আলমগীর, মতি মিয়া এবং আরও কয়েকজন অস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
লাইলু আক্তার তার এজাহারে উল্লেখ করেন, হামলাকারীরা ধারালো দা, কোদাল, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে তার স্বামী ইদু মিয়াকে ঘেরাও করে ফেলে। ১নং আসামি জাহাঙ্গীর কোদাল দিয়ে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে, ৩নং আসামি শাকিল দা দিয়ে আরও আঘাত করলে ইদু মিয়ার হাতের কনিষ্ঠ আঙুল কেটে যায়। অন্যদিকে ৫নং আসামি মতি মিয়া রড দিয়ে হাঁটুতে আঘাত করেন। হামলায় বাধা দিতে গেলে নূরে আলমকেও মারধর করা হয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় ইদু মিয়াকে প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ৩ আগস্ট রাত ৭টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শাহবাগ থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। পরদিন, ৪ আগস্ট রাতে গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।নিহতের স্ত্রী জানান, পারিবারিক শোক এবং আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতায় মামলা দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।