মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
খুলনার রুপসায় কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা চুরি করার মুলহোতা ইউনুস শেখ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ইউনুস উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের ইনসান শেখের ছেলে। সোমবার ১৮ আগষ্ট আসামি ইউনুস শেখকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তাকে আজ রবিবার ভোর রাতে রুপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ইউনুস শেখ কৃষি ব্যাংক ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। এছাড়া একই ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কসপ রয়েছে। তিনি জানান, ওয়ার্কসপ মালিক ইউনুসকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউনুস টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তবে এখনোও পর্যন্ত লুট হওয়া সব টাকা উদ্ধার করা যায় নি। পুলিশ জানায় ইউনুস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। ভোর রাতে ব্যাংকে কোন নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। আজ তাকে আদালতে প্রেরন করে রিমান্ডে নেওয়া হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ না থাকায় যেকোন সময় তাদেরকে পরিবার জিম্মায় দেওয়া হবে। গ্রেফতারকৃত ইউনুস জানান, তিনি প্রচুর ঋনের চাপে ছিলেন। ইতিপূর্বে চুরি করা টাকা থেকে কিছু ঋন পরিশোধ ও করেছেন তিনি। তার সীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যে কিছু টাকা উদ্ধার করেছে। রুপসা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কৃষি ব্যাংক পুর্ব রুপসা ঘাট শাখা ৬ টি তালা সহ ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ইউনুসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর পাওয়া গেছে। আরো তথ্য জানা এবং লুট হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্তে প্রমান মিলেছে, এই চুরির ঘটনাটি ইউনুস ঘটিয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে প্রেরন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। উল্লেখ্য গত ১৫ আগষ্ট শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙা। এঅবস্থা দেখে নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম বিষয়টি ব্যাংক কতৃপক্ষকে জানায়। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। এই ঘটনায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো: কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার ১৬ আগষ্ট বিকালে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রুপসা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৭। এদিকে ব্যাংক লুটের ঘটনায় কতৃপক্ষ দায়িত্ব অবহেলা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য আজ ১৮ আগষ্ট তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খুলনার উপমহাব্যবস্থাপক মো: রিয়াজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।