
মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
চার বছর আগে ভদ্রা খননে ব্যয় ৩০ কোটি টাকা। পরের বছরই পলিতে ভরাট। হামকুড়া নদী পলিতে এক যুগ আগেই বিরান ভুমি। এনদীর বুক চিরে ঘড়ে উঠেছে বাড়ি ও বড় বড় স্থাপনা। হরি ও পুর্ব ভদ্রা মৃত প্রায়। জরুরি পুন: খনন প্রকল্পে শৈলমারী রেগুলেটরে গেল বছর বরাদ্দ ১ কোটি ১ লাখ। ৩ মাসে অচল সব রেগুলেটর। চলতি বছর রেগুলেটর সচলে বরাদ্দ বেড়ে ১ কোটি ৬০ লাখ। ডুমুরিয়ার ৩ ইউনিয়নে ৭ খাল ও নদীতে বরাদ্দ ১ কোটি ২০ লাখ। এসব অধিকাংশ খালই ভরাট। এসব নদীর নাব্যতা ফেরাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এখনোও নেওয়া হয়নি পরিকল্পিত কোন মেগা প্রকল্প। ফলে এ বছরও অতি বৃষ্টিতে বিলডাকাতিয়া সহ ডুমুরিয়া – ফুলতলার কমপক্ষে ১০ ইউনিয়নের ১০ লাখ মানুষ এখন পানির নিচে। এ অঞ্চলের পানি নিস্কাশনের একমাত্র উৎস শৈলমারী ১০ বেল্ট রেগুলেটর। গত বছর ঔই ১০ বেল্টের সকল জলকপাট পানিতে ভরাট হয়ে যায়। পানি নিস্কাশনের সকল উৎস বন্ধ থাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে দুই উপজেলার মানুষ। ভরাট শৈলমারী রেগুলেটরের সামনে ক্যানেল সৃষ্টিতে হাজার হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কয়েক সপ্তাহ পলি অপসারনে অংশ নেয়। অবশেষে সকলের দাবির মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড লং বুম এবং ভাসমান এস্কেবেটর দিয়ে পলি অপসারন শুরু করে।জরুরি পুন: খনন প্রকল্প নামে এ পলি অপসারনে ১ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রচেষ্টায় শৈলমারী রেগুলেটর দিয়ে পানি নিস্কাশনের চ্যানেল সৃষ্টি হলেও ৩ মাসের মাথায় আবার ভরাট হয়ে যায়। চলতি বছর আগাম হানা দেয় বৃষ্টি। অতিবৃষ্টিতে আবারও এসব এলাকার বসতঘর, খাল,বিল, সবজির ক্ষেত ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার সবজির ক্ষেত ও মাছের ঘের। এবার বাজেট বাড়িয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ১৭ জুলাই থেকে দুটি লং বুম আনা হয়েছে। তার এক সপ্তাহ পর এসেছে একটি ভাসমান এস্কেবেটর। ১৫ দিন আগে পৌঁছেছে আরো একটি ভাসমান এস্কেবেটর। কিন্তু নষ্টের অজুহাতে প্রায়ই কোন না কোন এস্কেবেটর বন্ধ থাকে। প্রায় দেড় মাসেও পানি অপসারনের উৎস তৈরি হয়নি। তবে গেল বছর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি পাম্প দিয়ে পানি অপসারিত হচ্ছে। তাছাড়া শলুয়া কালিঘাট গেট দিয়ে ময়ুর নদী হয়ে অন্য একটি চ্যানেলে মাত্র দুদিন আগে থেকে পানি অপসারন শুরু হয়েছে। এদিকে দুবছর ধরে ১০ লাখ মানুষ একাধিকবার জলাবদ্ধতার কবলে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরি কোন প্রকল্প হাতে নেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর শোভনা ইউনিয়নের বড় বিলের খাল খননে ব্যয় করেছেন ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা, বাবলাতলা খালে ১৬ লাখ ২৮ হাজার টাকা, বাওড়ের খালে ২৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা, ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নে ষষ্ঠীতলা খালে ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, কোমলপুর খালে ১০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, মাগুরখালী ইউনিয়নের দোয়ানের খালে ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া খালে ১৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। বিভিন্ন প্রকল্পে কাড়ি কাড়ি টাকা ঢাললেও জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি মিলছে না। সঠিকভাবে সঠিক প্রকল্প হাতে না নেওয়ায় এবং টাকার সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় পাওবো’র অধিকাংশ টাকা পানিতে যাচ্ছে।