
মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার চার দিনের মাথায় অবশেষে খুলনার পুর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মো: নাসিম গনি ওরফে নাসিমকে (৫৬) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার ১২ জুন খুলনার খালিশপুর মুজগুন্নী পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবন থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহোযোগীতায় দিঘলিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা সহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ২০ জুন পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় তিনি প্রধান আসামি। তার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এইচ এম শাহীন। তিনি দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। গনেশ হত্যা মামলায় আদালত তাকে ৩২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। পুলিশ জানায় নাসিমের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, বাগেরহাটের ফকিরহাট, হরিনটানা থানা সহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুলনার আলোচিত গনেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, ফকিরহাটের জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অপহরন, ডাকতি, অস্ত্র বেচাকেনা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি করে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং হত্যা মামলায় ৩২ বছরের কারাদন্ডাদেশ রয়েছে। নাসিম ২০০২ সালে গনেশ হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নেন। খুলনার বিএল কলেজ গেটে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রিয়াজ শাহেদ হত্যা প্রচেষ্টার মামলারও আসামি তিনি। সর্বশেষ গত বুধবার ১৮ জুন সন্ধার দিকে খুলনার দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এস আই তারেকের নেতৃত্বে পুর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও একাধিক হতয়া মামলার আসামি নাসিমকে গ্রেফতারের জন্য উপজেলার ফরমাইশ খানা গোলারঘাট এলাকায় নাসিমকে ধরতে গেলে তার অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশের ৩ জন সদস্য সামান্য আহত হন। এঘটনার পর দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযান শুরু করলেও নাসিমকে আটক করতে পারেনি। যদিও রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিম বাহিনীর দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশ। এ বিষয়ে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন বলেন, উপজেলার ফরমাইশ খানা গ্রামে চরমপন্থী নেতা নাসিমকে গ্রেফতার করতে গেলে তার বাহিনী পুলিশের উপর চড়াও হয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় নাসিম বাহিনীর সাথে ধস্তাধস্তিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন এ ব্যাপারে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ১৯ জুন মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় নাসিমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া এঘটনায় গ্রেফতারকৃত রেজাউল ও আল মামুনকে আদালতে বৃহস্পতিবার সোপর্দ করা হয়। তবে, সর্বশেষ খুলনার মুজগুন্নী এলাকার একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় নাসিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রোববার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানাগেছে, চরমপন্থী নেতা নাসিম গত দুবছর আগে এলাকায় ফিরে আওয়ামীলীগের সাবেক স্থানীয় এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং শেখ পরিবারের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন। তিনি দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামিলীগের সদস্য বলেও এলাকাবাসী জানিয়েছেন।