, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কলমাকান্দায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা। কলমাকান্দায় ১৭ বছর পর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত। ময়মনসিংহে মৃত্তিকার বিভাগীয় কার্যালয় ও গবেষণাগার উদ্বোধন করেন মহাপরিচালক। আগের আমলের সেই মাফিয়াদেরকে একটি রাজনৈতিক দল প্রশ্রয় দিচ্ছে : নাহিদ ইসলাম।  অস্বাভাবিক গরমে ভুগছেন সারাদেশের মানুষ। আপনার ফোনে কোন ভার্সনের LMC বা GCam সাপোর্ট পাবে এবং কিভাবে সেই ভার্সন ডাউনলোড করবেন অতি সহজেই তা দেখে নিন!! জামালপুর সদর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড দাপুনিয়া জলাশয়ে অর্ধগলিত অজ্ঞত’নামা এক মৃত দেহ উদ্ধার। নিখোঁজ যুবদল নেতা শামীমের পরিবারের পাশে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী।৩ দিনের মধ্যে খোঁজ না মিললে লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি। ঈশ্বরগঞ্জে গলাকেটে রাকিব হত্যা, মামাতো ভাইসহ অন্যান্য মামলার আসামী গ্রেপ্তার -৬। কেন্দুয়ায় নিখোঁজ যুবদল নেতা শামীম এর পরিবারের পাশে ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী।

প্রেম মানেই বিপর্যয়, কেন্দুয়ার তরুণ সমাজ আজ কেন এর শিকার ?

  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ৮৮ পড়া হয়েছে

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা যেন আজ এক ভিন্ন রকম বাস্তবতার মুখে, প্রায় প্রতিদিনই বেরিয়ে আসছে প্রেমঘটিত অস্বাভাবিক নানা প্রশ্ন। কারও প্রেমিকার বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের অনশন, কেউ বিষপান,আবার কেউ ফাঁসিতে ঝুলে আত্নঘাতীর মতো বড় সিদ্ধান্ত।

এসব ঘটনার অধিকাংশই কিশোর/কিশোরী।

অতীতে বিভিন্ন সময় প্রেম ছিল গভীর অনুভুতি প্রেমময় আনন্দের , ছিল সম্মান এবং প্রতিশ্রুতির বন্ধনের, কিন্তু বর্তমানে প্রেম যেন পরিণতির চেয়ে আবেগের উৎসব। অনেকেই প্রেমের মর্ম না বুঝেই ‘ভালোবাসা’ নামক শব্দটিকে সংগি বানিয়ে অন্ধ আবেগের শিকার হয়। প্রেম-ভালোবাসা জীবনের একটি অংশ হতে পারে, কিন্তু সেটি যদি হয় অপরিণত ও অসচেতন সিদ্ধান্তের ফসল, তবে তা হতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ।

কয়েকদিনের কিছু ঘটনাবলীঃ

কেন্দুয়া নওপাড়া ইউনিয়নের বহুলী গ্রামের ৩৪ বছরের মেয়ের সাথে ১৪ বছরের সম্পর্কে জেরে ৪দিন অনশন করেছে ছেলে আলিম উদ্দিন এর বাড়িতে, প্রশাসনের সহযোগিতায় এখন নিরব ভুমিকায় মেয়ে, অভিযুক্ত বিদেশে পাড়ি।

গড়াডোবা ইউনিয়ন চন্ডলাড়া গ্রামে বিদেশ প্রবাসী ফেরত ছেলের সাথে অবৈধ মেলামেশা অস্বীকার করায় ছেলের বাড়িতে অনশন করা অবস্থায় প্রশাসনের সহযোগিতায় মামলা, অভিযুক্ত বিদেশ পাড়ি।

এদিকে রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন ১০ শ্রেনির শিক্ষার্থী আত্মহত্যা, অভিযুক্ত সম্পর্ক অস্বীকার।

গন্ডা ইউনিয়ন বৈরাটী গ্রামের সজীবের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফসল বাবুল মিয়ার ৬ষ্ট শ্রেনীর শিক্ষার্থী মীম আক্তারের ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি।

এমন অবস্থা কেন তৈরি হচ্ছে কেন্দুয়ায় ?

প্রথমত স্মার্টফোনে যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের একধরনের কৃত্রিম বাস্তবতা তৈরি করেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রেম শুরু হয় ফেসবুকে, আর শেষ হয় বিষে/ ফাঁসি।

দ্বিতীয়ত- অনেক পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীরব ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

অভিভাবকরাও সন্তানদের জন্য সময় বের করতে পারছেন না, আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসিক ও নৈতিক দিক থেকে শিক্ষার্থীদের গাইড করার মতো কোনো কার্যকর ভূমিকাও দেখা যায় না।

 

আমরা সবাই জানি তরুণদের প্রতি সহানুভূতি থাকা অতি জরুরি, কিন্তু তাদের আবেগতাড়িত ভুল সিদ্ধান্তকে প্রশ্রয় দেওয়া আত্মঘাতীও বলে আমি মনে করি। এই অপ্রাপ্তবয়স্করা একদিন সমাজের চালিকা শক্তি হবে, তাই তাদের মানসিক বিকাশ, সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে না পারলে পুরো সমাজকেই এর মূল্য দিতে হবে।

এখন সময় এসেছে চিন্তা বদলানোর,পরিবারকে হতে হবে আরও বন্ধুসুলভ, শিক্ষকদের হতে হবে আরও যত্নশীল, সমাজপতিদের হতে হবে আরও সক্রিয়। প্রয়োজন মিডিয়া ও প্রশাসনের সময়োপযোগী উদ্যোগ।

আমাদের তরুণ প্রজন্ম যেন প্রেমের নামে নিজের জীবন ধ্বংস না করে, প্রেম দিয়ে গড়ে তোলে সুন্দর ভবিষ্যত।

জনপ্রিয়

কলমাকান্দায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা।

প্রেম মানেই বিপর্যয়, কেন্দুয়ার তরুণ সমাজ আজ কেন এর শিকার ?

প্রকাশের সময় : ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা যেন আজ এক ভিন্ন রকম বাস্তবতার মুখে, প্রায় প্রতিদিনই বেরিয়ে আসছে প্রেমঘটিত অস্বাভাবিক নানা প্রশ্ন। কারও প্রেমিকার বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের অনশন, কেউ বিষপান,আবার কেউ ফাঁসিতে ঝুলে আত্নঘাতীর মতো বড় সিদ্ধান্ত।

এসব ঘটনার অধিকাংশই কিশোর/কিশোরী।

অতীতে বিভিন্ন সময় প্রেম ছিল গভীর অনুভুতি প্রেমময় আনন্দের , ছিল সম্মান এবং প্রতিশ্রুতির বন্ধনের, কিন্তু বর্তমানে প্রেম যেন পরিণতির চেয়ে আবেগের উৎসব। অনেকেই প্রেমের মর্ম না বুঝেই ‘ভালোবাসা’ নামক শব্দটিকে সংগি বানিয়ে অন্ধ আবেগের শিকার হয়। প্রেম-ভালোবাসা জীবনের একটি অংশ হতে পারে, কিন্তু সেটি যদি হয় অপরিণত ও অসচেতন সিদ্ধান্তের ফসল, তবে তা হতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ।

কয়েকদিনের কিছু ঘটনাবলীঃ

কেন্দুয়া নওপাড়া ইউনিয়নের বহুলী গ্রামের ৩৪ বছরের মেয়ের সাথে ১৪ বছরের সম্পর্কে জেরে ৪দিন অনশন করেছে ছেলে আলিম উদ্দিন এর বাড়িতে, প্রশাসনের সহযোগিতায় এখন নিরব ভুমিকায় মেয়ে, অভিযুক্ত বিদেশে পাড়ি।

গড়াডোবা ইউনিয়ন চন্ডলাড়া গ্রামে বিদেশ প্রবাসী ফেরত ছেলের সাথে অবৈধ মেলামেশা অস্বীকার করায় ছেলের বাড়িতে অনশন করা অবস্থায় প্রশাসনের সহযোগিতায় মামলা, অভিযুক্ত বিদেশ পাড়ি।

এদিকে রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন ১০ শ্রেনির শিক্ষার্থী আত্মহত্যা, অভিযুক্ত সম্পর্ক অস্বীকার।

গন্ডা ইউনিয়ন বৈরাটী গ্রামের সজীবের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফসল বাবুল মিয়ার ৬ষ্ট শ্রেনীর শিক্ষার্থী মীম আক্তারের ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি।

এমন অবস্থা কেন তৈরি হচ্ছে কেন্দুয়ায় ?

প্রথমত স্মার্টফোনে যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের একধরনের কৃত্রিম বাস্তবতা তৈরি করেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রেম শুরু হয় ফেসবুকে, আর শেষ হয় বিষে/ ফাঁসি।

দ্বিতীয়ত- অনেক পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীরব ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

অভিভাবকরাও সন্তানদের জন্য সময় বের করতে পারছেন না, আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসিক ও নৈতিক দিক থেকে শিক্ষার্থীদের গাইড করার মতো কোনো কার্যকর ভূমিকাও দেখা যায় না।

 

আমরা সবাই জানি তরুণদের প্রতি সহানুভূতি থাকা অতি জরুরি, কিন্তু তাদের আবেগতাড়িত ভুল সিদ্ধান্তকে প্রশ্রয় দেওয়া আত্মঘাতীও বলে আমি মনে করি। এই অপ্রাপ্তবয়স্করা একদিন সমাজের চালিকা শক্তি হবে, তাই তাদের মানসিক বিকাশ, সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে না পারলে পুরো সমাজকেই এর মূল্য দিতে হবে।

এখন সময় এসেছে চিন্তা বদলানোর,পরিবারকে হতে হবে আরও বন্ধুসুলভ, শিক্ষকদের হতে হবে আরও যত্নশীল, সমাজপতিদের হতে হবে আরও সক্রিয়। প্রয়োজন মিডিয়া ও প্রশাসনের সময়োপযোগী উদ্যোগ।

আমাদের তরুণ প্রজন্ম যেন প্রেমের নামে নিজের জীবন ধ্বংস না করে, প্রেম দিয়ে গড়ে তোলে সুন্দর ভবিষ্যত।