
জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান;
মিশরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্র রিয়াজ উদ্দিন আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার, ৯ জুলাই কায়রোর আব্দু বাসা এলাকায় নিজের ভাড়া বাসায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ঘটনার সময় রিয়াজের স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে কায়রোর দাররসা এলাকায় একটি ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। বাসায় একা থাকার সুযোগে রিয়াজ আত্মহত্যা করেন।
রিয়াজ উদ্দিন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিশরে ডলার লেনদেন, হুন্ডি এবং “মিশর টু বাংলাদেশ” আমদানি-রপ্তানিনির্ভর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলেন।
আত্মহত্যার আগে তিনি একটি সুইসাইড নোট রেখে যান। ওই চিঠিতে তিনি দাবি করেন—রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংকিং জটিলতা এবং আমদানি-রপ্তানিতে সমস্যা সৃষ্টি হয় এর কারণে তার ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি ৩ কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হন। এ পরিস্থিতির জন্য তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেন।
মৃত্যুর পর রিয়াজের মরদেহ এখনো কায়রোতে তার বাসায় রয়েছে। মিশরীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং সুইসাইড নোট ও পারিপার্শ্বিক প্রমাণ সংগ্রহ করছে।
মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে দেওয়া বার্তায় রিয়াজ অনুরোধ জানিয়েছিলেন, যদি মিশরেই তার মৃত্যু হয়, তবে যেন তাকে সেখানেই দাফন করা হয়। তবে বাংলাদেশে থাকা তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন মরদেহ দেশে ফিরিয়ে এনে নিজ এলাকায় দাফনের দাবি জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
রিয়াজ উদ্দিনের আকস্মিক এই মৃত্যুর খবরে মিশরে অবস্থানরত বাংলাদেশি ছাত্র ও প্রবাসী সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
লেখক ও কলামিস্ট, শিক্ষার্থী, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো,মিশর