
লুৎফুন্নাহার রুমা, ব্যুরো চীফ ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ মো. রাকিবুল হাসান (১৮) নামে এক তরুণকে গলাকেটে ও এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে মামাতো ভাইসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ।
১১ জুলাই রোজ শুক্রবার বিকালে মামাতো ভাই জুবায়ের হাসান (১৯) ও নিহত রাকিবের বন্ধু কাউসার আহমেদ (১৯)-কে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা-পুলিশ। সকালে নিহত রাকিবের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।
ইতিপূর্বে গতকাল (১০ জুলাই) বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪ টায় উপজেলার সোহাগি ইউনিয়নের হাটুলিয়া গ্রাম থেকে তরুণ রাকিবের লাশটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ঐ গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।
ঘটনার দিন রাতেই রাকিবের বাবা আব্দুস ছালাম বাদী হয়ে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে জুবায়ের হাসান ও কাউসার আহমেদকে আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কাউসার আহমেদ হাটুলিয়া গ্রামের মুসলিম উদ্দীনের ছেলে ও জুবায়ের হানিফ খান পাঠানের ছেলে।
হত্যার কারণ হিসেবে প্রাথমিক তদন্তে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ ইনচার্জ এর বক্তব্যে , বন্ধুদের সাথে কোন বিষয়ে ঝামেলার কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
নিহত রাকিবের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খাটের বিছানায় পড়ে ছিল রাকিবের রক্তাক্ত নিথরদেহ। বিছানার পাশের দেয়ালে লেগে আছে রক্তের দাগ। মুখে চাপা দেওয়া ছিল একটি বালিশ। বালিশ সরাতেই মিলে রাকিবের গলাকাটা মরদেহ। মুখ, ঘাড় ও কপালেও জখমের চিহ্ন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাকিবুল হাসান বাড়িতে একাই থাকতো। ২০২৩ সালে স্থানীয় হাটুলিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার পর আর লেখাপড়া করেনি রাকিব। মা রুবিনা আক্তার ও ১০ বছর বসয়ী রাকিবুলের ছোট ভাই শাকিলকে নিয়ে তার বাবা আব্দুস সালাম নরসিংদী থাকে। সেখানে একটি গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করেন রাকিবের বাবা-মা।
রাকিবুল হাসানের বাবা আব্দুস ছালাম বলেন, ‘ভাগিনা জুবায়ের ও রাকিবের বন্ধু কাউসারসহ আরও কয়েকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত আছে বলে সন্দেহ হচ্ছে। কারণ ওরা কয়েকজন সবসময়ই একসাথে থাকত। কিন্তু কি কারণে এভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান জানান,খবর পেয়ে ঘটনাস্থল মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। ঐ ঘটনায় রাকিবের বাবা বাদি হয়ে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে ভাগিনা জুবায়ের ও রাকিবের বন্ধু কাউসারের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করে।ঐ সূত্রে আসামীদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে ও সার্কেল স্যার সার্বিক তত্বাবধানে আলোচিত রাকিবুলদ হাসানকে গলাকেটে হত্যা মামলার দুজন, মারামারি মামলার তিনজন ও পরোয়ানা ভুক্ত আসামী সহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।এছাড়াও উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থানা পুলিশের এ ধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে।