, শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দৈনিক সাম্যবাদী নিউজ

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হক মিয়া স্ট্যান্ড রিলিজ ও তদন্তে মিথ্যা অভিযোগের প্রমাণ।

  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • ১০৪ পড়া হয়েছে

কেন্দুয়া প্রতিনিধি;

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের আধিপত্য অবশেষে ভেঙে পড়েছে। এই সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হক মিয়াকে তদন্তে মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্ট্যান্ড রিলিজ করে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

২০২৫ সালের ১৫ জুলাই, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সালমা লাইজু স্বাক্ষরিত আদেশে তাকে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয়। পরদিন ১৬ জুলাই কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় এবং তিনি ইতোমধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে আব্দুল হক মিয়া বলেন,“স্যারের নানান অনিয়ম নিয়ে আমরা অভিযোগ করেছিলাম বলেই আমাকে বদলি করা হয়েছে। আমি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছি।”

অপরদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, “১৫ জুলাই বদলির আদেশ পাওয়ার পর ১৬ জুলাই তাকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে।”

তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আব্দুল হক মিয়া নিজের ইউনিয়নে থেকেই চাকরি করছিলেন। তিনি প্রকল্প গ্রহণ, বাজেট বরাদ্দ ও বাস্তবায়নে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব চালিয়ে আসছিলেন। এমনকি সরকারি কর্মকর্তা হয়েও রাজনৈতিক প্রচারণায় অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী।

২০২৫ সালের ১২ মে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার-এর বিরুদ্ধে ৪২ জন কর্মচারীর স্বাক্ষরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়। তবে তদন্তে দেখা যায়, অভিযোগকারীদের অনেকে জানতেনই না যে তাদের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এমনকি চাকরিতে না থাকা ব্যক্তিদের স্বাক্ষরও ওই অভিযোগে ব্যবহৃত হয়।

তদন্ত শুরুর আগেই কিছু অসাধু কর্মচারী সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করেন, যা সরকারি আচরণবিধির লঙ্ঘন। একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, আব্দুল হক মিয়া অফিসে সহকর্মীদের হুমকি দিতেন, সিনিয়রদের সাথে দুর্ব্যবহার করতেন এবং অফিস পরিচালনায় অহেতুক হস্তক্ষেপ করতেন, যার ফলে অফিসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সিন্ডিকেটবিরোধী অবস্থান নেন। ফলে তিনি একাধিক ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হন। তবে তদন্তে অভিযোগের ভিত্তিহীনতা প্রমাণ হওয়ায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কেন্দুয়া কৃষি অফিসে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরেছে। তবে তারা মনে করছেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকলে পুরনো সিন্ডিকেট পুনরায় সক্রিয় হতে পারে।

জনপ্রিয়

দৈনিক সাম্যবাদী নিউজ

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হক মিয়া স্ট্যান্ড রিলিজ ও তদন্তে মিথ্যা অভিযোগের প্রমাণ।

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

কেন্দুয়া প্রতিনিধি;

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের আধিপত্য অবশেষে ভেঙে পড়েছে। এই সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হক মিয়াকে তদন্তে মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্ট্যান্ড রিলিজ করে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

২০২৫ সালের ১৫ জুলাই, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সালমা লাইজু স্বাক্ষরিত আদেশে তাকে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয়। পরদিন ১৬ জুলাই কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় এবং তিনি ইতোমধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে আব্দুল হক মিয়া বলেন,“স্যারের নানান অনিয়ম নিয়ে আমরা অভিযোগ করেছিলাম বলেই আমাকে বদলি করা হয়েছে। আমি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছি।”

অপরদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, “১৫ জুলাই বদলির আদেশ পাওয়ার পর ১৬ জুলাই তাকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে।”

তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আব্দুল হক মিয়া নিজের ইউনিয়নে থেকেই চাকরি করছিলেন। তিনি প্রকল্প গ্রহণ, বাজেট বরাদ্দ ও বাস্তবায়নে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব চালিয়ে আসছিলেন। এমনকি সরকারি কর্মকর্তা হয়েও রাজনৈতিক প্রচারণায় অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী।

২০২৫ সালের ১২ মে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার-এর বিরুদ্ধে ৪২ জন কর্মচারীর স্বাক্ষরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়। তবে তদন্তে দেখা যায়, অভিযোগকারীদের অনেকে জানতেনই না যে তাদের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এমনকি চাকরিতে না থাকা ব্যক্তিদের স্বাক্ষরও ওই অভিযোগে ব্যবহৃত হয়।

তদন্ত শুরুর আগেই কিছু অসাধু কর্মচারী সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করেন, যা সরকারি আচরণবিধির লঙ্ঘন। একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, আব্দুল হক মিয়া অফিসে সহকর্মীদের হুমকি দিতেন, সিনিয়রদের সাথে দুর্ব্যবহার করতেন এবং অফিস পরিচালনায় অহেতুক হস্তক্ষেপ করতেন, যার ফলে অফিসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সিন্ডিকেটবিরোধী অবস্থান নেন। ফলে তিনি একাধিক ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হন। তবে তদন্তে অভিযোগের ভিত্তিহীনতা প্রমাণ হওয়ায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কেন্দুয়া কৃষি অফিসে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরেছে। তবে তারা মনে করছেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকলে পুরনো সিন্ডিকেট পুনরায় সক্রিয় হতে পারে।