
মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সদস্যদের তৈরি এডহক কমিটি ভেঙে দিয়ে যে ১১ সদস্যর আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা বিধি সম্মত ছিল না। বিধি বহির্ভুত আহবায়ক কমিটি যে ১৩ জনকে সদস্য পদ দিয়েছেন এবং ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন সেটিও বিধিবহির্ভূত বলে প্রতিয়মান হয়েছে। গত ১৪ আগষ্ট সংগঠনের নির্বাচনী আপীল বোর্ড এই রায় প্রদান করেছেন। এর ফলে খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে অবৈধ ভাবে তৈরি করা ১৩ জন ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ বছর বানিজ্যক সংগঠন নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ ছিল শেখ পরিবারের নিয়ন্ত্রনে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ সদস্যরা শেখ সোহেলের নেতৃত্বাধীন কমিটির সবাইকে পদত্যাগে বাধ্য করান। পরবর্তীতে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যর এডহক কমিটি। প্রবিন দল নিয়ে নিরপেক্ষ ব্যবসায়ীরা ছিলেন এডহক কমিটির সদস্য। তারা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। গত ২৯ ডিসেম্বর কয়েকজন ছাত্রকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা কার্যালয়টি দখল করে ১১ সদস্যর আহবায়ক কমিটি করেন। আহবায়ক কমিটির বেশিরভাগ সদস্যই ছিলেন পুর্বের সুবিধাভোগী। এদের পুর্নবাসন প্রক্রিয়া বিপুল অংকের টাকা হাত বদলের অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হলে গত ১১ ফেব্রুয়ারী খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ( সার্বিক) মো: হুসেইন শওকতকে সংগঠনটির প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া বানিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে মালিক গ্রুপের দখলতন্ত্রের অবসান ঘটে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছকে চেয়ারম্যান করে ৩ সদস্যর নির্বাচন বোর্ড এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু সায়েদ মো: মনজুর আলমকে চেয়ারম্যান করে আপীল বোর্ড গঠন করেন। গত ৯ জুলাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফশিল অনুযায়ী ৭ আগষ্ট প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা্ যায় সমিতির ১৪০ জন সদস্যর বাহিরে ১৩ জনকে অতিরিক্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১০ আগষ্ট বিষয়টি নিয়ে আপীল করেন কয়েকজন সদস্য। ১৩ আগষ্ট আপীল শুনানী শেষে ১৪ আগষ্ট রায় ঘোষণা করা হয়। ১৫ আগষ্ট চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণ করা হবে। রায়ে আপীল কমিটির পর্যবেক্ষনে বলা হয় সংগঠনের সংঘ স্মারক এবং সংঘ বিধি ১৩ (২) উপবিধি অনুযায়ী বানিজ্য সংগঠন বিধিমালা ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ মতে প্রতি দু বছর অন্তর কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যকরী পরিষদ গঠিত হবে। নির্বাচনের পুর্বে এই ক্ষেত্রে গ্রুপের অফিস সচিব একটি বিশেষ সাধারণ সভা আহবান করে ঐ সভাতেই গ্রুপের কার্য পরিচালনার জন্য সাধারণ সদস্যদের মধ্যে হতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন করতে হবে। নির্বাচনের সকল ধারা উপধারা মতে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। কিন্তু সংগঠনের সংঘ স্মারক এবং সংঘ বিধি ১৩ নং বিধির(২) নং উপবিধি অনুযায়ী গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি ভেঙে দিয়ে এডহক কমিটির পরিবর্তে ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে যা বিদ্যমদন বিধির লঘ্নন। নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ সংঘ স্মারক এবং সংঘ বিধি ২০১৩ এর কোন বিধিতেই আহবায়ক কমিটি বলে কোনো কমিটির অস্তিত্ত্ব নেই বিধায় বিধি বহির্ভুত এই আহবায়ক কমিটি দ্ধারা সদস্য গ্রহণ ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি বিহিভুত বলে প্রতিয়মান হয়েছে। রায়ে, নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ সংঘ স্মারক এবং সংঘ বিধি ২০১৩ এর বিধি – ৭ অনুযায়ী অভিযোগে বর্নিত ১৩ জন সদস্য অন্তর্ভুক্তি সঠিক হয়নি মর্মে প্রতিয়মান হওয়ায় আপীল মঞ্জুর করা হলো? এব্যাপারে নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, আইন অনুযায়ী সব কিছু করা হচ্ছে। সঠিক নিয়মে যথা সময়ে নির্বাচন হবে।