
মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব বর্নাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বিজয়া দশমীর দিনে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিভিন্ন নদী, পুকুরে দেবি দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মন্ডপ গুলোতে ভক্তদের সমাগম লক্ষ্য করা যায়। তারা দেবির পায়ে অঞ্জলি অর্পন করে বিজয়ার জন্য প্রার্থনা করেন। এরপর শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাক- ঢোল- উলুধ্বনি ও শঙ্খ ধবনিতে মুখর ওয়ে উঠেছে পুরো পরিবেশ। মহানগরীর ১৪০ টি পুজা মন্ডপের মধ্যে ২৮ মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে নগরীর জেলাখানা ঘাটের ভৈরব নদে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে বিসর্জন শুরু হয়। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, র্যাব,নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস,পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্যেদের তৎপরতায় শান্তি – শৃঙ্খলার সাথে এ কাজ সম্পন্ন হয়। যাদের নিজস্ব পুকুর বা দিঘি রয়েছে তারা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিসর্জন দিচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মানুষের মন থেকে আসুরিক প্রবৃত্তি যেমন কাম,ক্রোধ,হিংসা ও লালসা দুর করাই বিজয়া দশমীর তাৎপর্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষ একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ত্ববোধ গড়ে তুলে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সাধন করে। ভক্তরা জানান, এই কয়েকটা দিন স্বপ্নের মতো কেটেছে। মা দুর্গা আমাদের মাঝে ছিলেন, তাই আনন্দে ভরে উঠেছিল চারপাশ। কিন মা চলে গেলে, সেই কষ্টে বুকটা ভরে উঠেছে। আবারও এক বছরের অপেক্ষা। এবারের পুজায় ভক্তরা বিশেষ প্রার্থনা করেছেন যেন দেশ শান্তিময় হয়। সবার জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি নেমে আসে। পুজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান আমরা ভারাক্রান্ত হ্নদয়ে মাকে বিদায় জানিয়েছি। মা আমাদের ধরাধামে এসেছিলেন আমাদের মঙ্গলের জন্য, অসুর বধ করার জন্য। আমরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, যাতে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে। এবার নির্বিঘ্নভাবে বিসর্জন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি চিল চোখে পড়ার মত। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ,র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি নৌ- দুর্ঘটনা এড়াতে টহলে ছিল নৌ- পুলিশ ও কোস্টগার্ড। এদিকে দশমির দিন সকাল থেকে নগরীর মন্ডল গুলোতে ভক্তরা দেবি দুর্গার কপালে সিদুর দিয়ে, সেই সিদুর নিজেদের কপালে লাগিয়ে ঢাকের তালে তালে নেচে গেয়ে দেবি দুর্গাকে অঞ্জলি দিয়ে শেষ বারের মত পুজা সম্পন করেন। তিথি অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে ১০টার মধ্যে মন্ডপ গুলোতে অঞ্জলি ও পুজার শেষ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এরপর একে একে মন্ডলগুলোতে দেবি দুর্গাকে বিসর্জনের জন্য প্রস্তুতি নিতে দেখা যায় এবং বিকেলের পর থেকে ভৈরব নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে দেখা যায়। এদিকে নগরীর শিল্পাঞ্চল খালিশপুরে উকিলবাড়ি, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম ও আলমনগর পালপাড়া মন্দির কমিটি জেলখানাঘাট ও ভৈরব নদীতে ঢাকের তালে তালে, উলধবনি ও শঙ্খ ধবনিতে দেবিদুর্গাকে বিসর্জন দেয়।











