
বাংলাদেশে এখনও প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বাল্যবিয়েকে একটি গুরুতর অপরাধ বলে মনে করেন না, যা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত হতাশাজনক ও দুঃখজনক। দেশের অনেক এলাকায় এখনো বাল্যবিয়েকে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি প্রথা হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে মেয়েরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই তাদের স্কুলছুটের হার বাড়তে থাকে, যার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া। অনেক পরিবারই দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা বা সামাজিক চাপে পড়ে মেয়েদের অপ্রাপ্তবয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন।
এই প্রবণতা শুধু একটি শিশুর শৈশবকে কেড়ে নেয় না, বরং তার স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ জীবনের সম্ভাবনাকেও ধ্বংস করে দেয়। অল্পবয়সী মেয়েরা গর্ভধারণের কারণে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে, যার মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
বাল্যবিয়ে রোধে আইন থাকলেও তার বাস্তব প্রয়োগ এখনো অনেক দুর্বল। তাই সরকারকে শুধু আইন প্রণয়ন নয়, এই আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও আরও কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি, সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা দরকার বাল্য বিয়ে কোনো সংস্কৃতি নয়, বরং এটি একটি সামাজিক অপরাধ এবং উন্নয়নের পথে বড় বাধা।
শিশুদের নিরাপদ, শিক্ষাপূর্ণ ও স্বপ্নময় শৈশব নিশ্চিত করতে হলে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গোলাম কিবরিয়া ফারাজ
দীঘিনালা খাগড়াছড়ির