, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কলমাকান্দায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা। কলমাকান্দায় ১৭ বছর পর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত। ময়মনসিংহে মৃত্তিকার বিভাগীয় কার্যালয় ও গবেষণাগার উদ্বোধন করেন মহাপরিচালক। আগের আমলের সেই মাফিয়াদেরকে একটি রাজনৈতিক দল প্রশ্রয় দিচ্ছে : নাহিদ ইসলাম।  অস্বাভাবিক গরমে ভুগছেন সারাদেশের মানুষ। আপনার ফোনে কোন ভার্সনের LMC বা GCam সাপোর্ট পাবে এবং কিভাবে সেই ভার্সন ডাউনলোড করবেন অতি সহজেই তা দেখে নিন!! জামালপুর সদর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড দাপুনিয়া জলাশয়ে অর্ধগলিত অজ্ঞত’নামা এক মৃত দেহ উদ্ধার। নিখোঁজ যুবদল নেতা শামীমের পরিবারের পাশে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী।৩ দিনের মধ্যে খোঁজ না মিললে লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি। ঈশ্বরগঞ্জে গলাকেটে রাকিব হত্যা, মামাতো ভাইসহ অন্যান্য মামলার আসামী গ্রেপ্তার -৬। কেন্দুয়ায় নিখোঁজ যুবদল নেতা শামীম এর পরিবারের পাশে ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী।

ধোঁয়ার দামে আগুন দিলে আগুনই ছড়াবে।

কলাম: রেজুয়ান হাসান;

তামাককে ঘৃণা করা যায়, ধূমপানকে নিরুৎসাহিত করাও যুক্তিযুক্ত কিন্তু সেটা কি শাস্তিমূলক করের নামে প্রজন্মের বিরুদ্ধে এক ধরনের আর্থিক প্রতিশোধ হয়ে উঠবে?

দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রজ্ঞা নামের একটি সংগঠন দাবি করেছে, সরকার যদি নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম একত্রে ৯০ টাকা করে দেয়, তাহলে ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসবে। আরো বলা হয়েছে, তরুণেরা সস্তা সিগারেট পেলে উৎসাহিত হবে। কী চমৎকার যুক্তি যেন দাম বাড়ালেই দেশ সৎ হয়ে যাবে!

প্রশ্ন হলো তরুণ প্রজন্ম কি কেবল সিগারেটের দামের ওপর নির্ভর করে? সিগারেটের দাম কি তাদের মানসিক স্বাস্থ্য, হতাশা অথবা বেকারত্ব কমাতে পারে? না, বরং এই তরুণই চায়ের দোকানে ৫ টাকা বাঁচিয়ে দুই বন্ধু মিলে একটা সিগারেট কিনে ভাগ করে টানে। সিগারেটের দাম বাড়লে সে ধূমপান ছাড়বে না, বরং রাস্তায় ছিনতাই বাড়বে, বিকল্প নেশার পথে ঝুঁকবে যা আরও ভয়াবহ।

এটা বোঝা দরকার, সিগারেটের ওপর একচেটিয়া কর আরোপ করে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা এক অর্থে সরকার নিজেই স্বীকার করছে যে তরুণদের দুর্বলতার পেছনে তারা টাকা কামাতে চায়। এ যেন ধর্ষিতার গলায় গয়না রেখে আদালতে সাজা কমানোর অনুরোধ।

সিগারেটের ওপর অতিরিক্ত কর বসানো মানে দরিদ্র মানুষদের, হতাশ যুবকদের, নিম্নবিত্ত শ্রমজীবীদের ওপর চাপ বাড়ানো। সিগারেট খারাপ এটা সবাই জানে। কিন্তু এটার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও বাস্তবতার নিরিখে দাম বাড়ানো মানেই কি প্রতিরোধ? নাকি এটা আরও গোপন, আরও ডিপ্রেশনড এক প্রজন্ম তৈরি করবে?

তামাকের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে তামাকের সঙ্গে লড়াইটা অর্থনৈতিক নয়, এটা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ।

একটা কিশোর যখন বন্ধুদের দেখে প্রথমবার সিগারেট হাতে নেয়, তখন তার মনে সমাজ বা রাজস্বের কথা থাকে না, থাকে একধরনের স্বীকৃতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।

তাই, দাম বাড়িয়ে সিগারেট দুষ্প্রাপ্য করে তাকে অভিজাত বা শীতল পণ্য বানিয়ে দিচ্ছে সরকার ও কর সমর্থক মহল। এর বদলে দরকার শিক্ষাগত সচেতনতা, কাউন্সেলিং শিল্প সংস্কৃতি সাহিত্য খেলার মাঠ, কর্মসংস্থান যা ধূমপানের চেয়ে ভালো বিকল্প তুলে ধরবে।

না, আমরা সিগারেটকে সমর্থন করি না। কিন্তু দাম বাড়িয়ে তরুণদের প্রতিরোধ করা যায় না। তারা প্রতিরোধ করে জীবনকে, সমাজের বৈষম্যকে না নিছক একটা পণ্যের দামে।

অতএব, এই করনীতি ধূমপান কমাবে না এটা শুধু ধোঁয়া ছড়াবে।

লেখকের ফেসবুক পেইজ

https://www.facebook.com/rejowenhasanjo

  1. জিমেইল rejowenhasan@gmail.com

 

জনপ্রিয়

কলমাকান্দায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা।

ধোঁয়ার দামে আগুন দিলে আগুনই ছড়াবে।

প্রকাশের সময় : ১১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

কলাম: রেজুয়ান হাসান;

তামাককে ঘৃণা করা যায়, ধূমপানকে নিরুৎসাহিত করাও যুক্তিযুক্ত কিন্তু সেটা কি শাস্তিমূলক করের নামে প্রজন্মের বিরুদ্ধে এক ধরনের আর্থিক প্রতিশোধ হয়ে উঠবে?

দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রজ্ঞা নামের একটি সংগঠন দাবি করেছে, সরকার যদি নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম একত্রে ৯০ টাকা করে দেয়, তাহলে ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসবে। আরো বলা হয়েছে, তরুণেরা সস্তা সিগারেট পেলে উৎসাহিত হবে। কী চমৎকার যুক্তি যেন দাম বাড়ালেই দেশ সৎ হয়ে যাবে!

প্রশ্ন হলো তরুণ প্রজন্ম কি কেবল সিগারেটের দামের ওপর নির্ভর করে? সিগারেটের দাম কি তাদের মানসিক স্বাস্থ্য, হতাশা অথবা বেকারত্ব কমাতে পারে? না, বরং এই তরুণই চায়ের দোকানে ৫ টাকা বাঁচিয়ে দুই বন্ধু মিলে একটা সিগারেট কিনে ভাগ করে টানে। সিগারেটের দাম বাড়লে সে ধূমপান ছাড়বে না, বরং রাস্তায় ছিনতাই বাড়বে, বিকল্প নেশার পথে ঝুঁকবে যা আরও ভয়াবহ।

এটা বোঝা দরকার, সিগারেটের ওপর একচেটিয়া কর আরোপ করে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা এক অর্থে সরকার নিজেই স্বীকার করছে যে তরুণদের দুর্বলতার পেছনে তারা টাকা কামাতে চায়। এ যেন ধর্ষিতার গলায় গয়না রেখে আদালতে সাজা কমানোর অনুরোধ।

সিগারেটের ওপর অতিরিক্ত কর বসানো মানে দরিদ্র মানুষদের, হতাশ যুবকদের, নিম্নবিত্ত শ্রমজীবীদের ওপর চাপ বাড়ানো। সিগারেট খারাপ এটা সবাই জানে। কিন্তু এটার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও বাস্তবতার নিরিখে দাম বাড়ানো মানেই কি প্রতিরোধ? নাকি এটা আরও গোপন, আরও ডিপ্রেশনড এক প্রজন্ম তৈরি করবে?

তামাকের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে তামাকের সঙ্গে লড়াইটা অর্থনৈতিক নয়, এটা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ।

একটা কিশোর যখন বন্ধুদের দেখে প্রথমবার সিগারেট হাতে নেয়, তখন তার মনে সমাজ বা রাজস্বের কথা থাকে না, থাকে একধরনের স্বীকৃতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।

তাই, দাম বাড়িয়ে সিগারেট দুষ্প্রাপ্য করে তাকে অভিজাত বা শীতল পণ্য বানিয়ে দিচ্ছে সরকার ও কর সমর্থক মহল। এর বদলে দরকার শিক্ষাগত সচেতনতা, কাউন্সেলিং শিল্প সংস্কৃতি সাহিত্য খেলার মাঠ, কর্মসংস্থান যা ধূমপানের চেয়ে ভালো বিকল্প তুলে ধরবে।

না, আমরা সিগারেটকে সমর্থন করি না। কিন্তু দাম বাড়িয়ে তরুণদের প্রতিরোধ করা যায় না। তারা প্রতিরোধ করে জীবনকে, সমাজের বৈষম্যকে না নিছক একটা পণ্যের দামে।

অতএব, এই করনীতি ধূমপান কমাবে না এটা শুধু ধোঁয়া ছড়াবে।

লেখকের ফেসবুক পেইজ

https://www.facebook.com/rejowenhasanjo

  1. জিমেইল rejowenhasan@gmail.com